২২ এপ্রি, ২০১১

জন্মদিনের চিঠি-মা'কে

স্বাধীনতার বছরতিনেক আগে, দিনটা ছিল ৯ইবৈশাখ ।
তুমি দেখেছিলে প্রথম ভোরের আলো,
কোলকাতার হাসপাতালে, তখন শ্বেতাঙ্গিনী নার্স ।
তোমার ধবধবে ফর্সা তুলতুলে হাত-পা, মাথাভর্তি কালো চুল
কপালে বাদামী তিল, চিবুকে কালো তিল, পিঠে লাল জড়ুল
কেউ নাম দিল তিলোত্তমা, কেউ ডাকল কৃষ্ণা কেউ গৌরী বলে ।
তুমি তখন ঘুম, ঘুম আর ঘুম !
সেই একরত্তিটি বাড়ি এলে, বাড়তে থাকলে কলে কলে আর বড় হলে 
তারপর স্কুল, গান খেলাধূলোর ফাঁকে ফাঁকে আর পাঁচটার মত ।
ভালোবাসার রূপকথা তৈরী হল তোমার  ।
তুমি তখন বেথুনসাহেবের কলেজে, আর সে চাকরীতে ।
লুকিয়ে দেখা চিলেকোঠার বিকেলগুলোয়, ছায়াছবির অন্ধকারে..  
তুমি তখন আটপৌরে ফুলিয়ার তাঁতে বছর ঊণিশ কি কুড়ি ।
পরিপাটী দুটো বেণী, হাতে সোনার চুড়ি 
তারপর একে একে সানাই, সিঁথিময়ূর, শাঁখ, উলুধ্বনি,
লক্ষীমেয়ে গুটিগুটি, চললে তুমি তার হাত ধরে 
তোমাদের সেই হুটোপাটি, ছাদের ওপর হাসিঠাট্টায়,
ঝুল বারান্দায় হাত ধরাধরি, কোলে এল ফুটফুটে দুটি ।
আজো সেই হাত ধরা তোমাদের; কত ঝড়ঝাপটার রেলিংএ
মনখারাপের কার্ণিশে আর সেই পুরোণো ছাদের প্যারাপেটে