২৯ জুন, ২০১১

বৃষ্টি-সহজাত

সেবার ছিল আমার প্রথম বৃষ্টিতে ভেজা । তরতর করে আমার স্কুলের ক্লাস এগুচ্ছে আর এগুচ্ছে আমার কৈশোর থেকে প্রথম বয়ঃসন্ধির  গোল্লাছুটের  দিনগুলো। বর্ষার মেঘের কাছে নতজানু হয়ে বলে চলেছি "একটিবার তাকে দেখব, সুযোগ করে দাও নীলমেঘ "
চুলোয় গেল পড়াশুনো, গিটার বাজানো, ছবি আঁকা । সেই পাশের বাড়ির ছাদে একবার দেখেছিলাম এলোচুলে সেই মেয়েটাকে । মামারবাড়ি এসেছিল নাকি ...দেবলা ঝি বলছিল মা'কে । বর্ষার প্রথম মেঘ ডাকানিতে অঙ্কখাতা ফেলে রেখে ছুট্টে গেছিলাম ছাদের আলসের ধারে , যদি তাকে দেখতে পাই ! খোলাচুলে,  আকাশ নীল  খড়কে ডুরে গাছকোমর দিয়ে বাঁধা , মনে হল নাকে ছোট্ট নাকছাবিও । দুধে আলতা পায়ের গোছে বিছুয়াও ছিল যেন । মায়েরা বলত " নাক মাটা মাটা চোখ ভাসা, সেই মেয়ে খাসা " ঠিক তেমনি হবে বোধ হয় । কি জানি এর আগে কোনো মেয়ের দিকে তেমন করে তো আর তাকাইনি । মায়ের গন্ধ তখনো আমার নাকে । সবে হাফপ্যান্ট ছেড়ে ফুল ধরেছি । 
বৃষ্টির বিরাম নেই সেবার । কিন্তু তার আর দেখা নেই । আবার মন ভারি করে পড়াশুনোয় মন । ছুটতে লাগল ফুটবলের বিকেল, গিটারের ক্লাস , উপপাদ্যের অনুশীলন আর বর্ষামঙ্গলের অপেক্ষা । হঠাত পাশের বাড়ি পুজোর আওয়াজ । পূর্ণিমার রাতে বৃষ্টি থামা ছাদে উঠে পায়চারি করছি । ছাদের আলসের কাছে যেতেই নূপুরের সিঞ্জিনি । ঐ বুঝি সে এয়েছে । কাছে যেতেই কোনো আওয়াজ নেই । মা বুঝি গেছে ঐ পাশের বাড়ির পুজোতে । কি যেন বলছিল সকালে মা । শান্তি স্বস্ত্যয়ন আছে সে বাড়িতে । মা ফিরে এল কিছুপরেই । সে চলে গেছে সকলকে ছেড়ে । মা বলল ।  ধূপ জ্বেলে পড়ার টেবিলে পা দোলাচ্ছিল । শাড়ি থেকে আগুণ এসে হঠাত তাকে নিয়ে চলে গেছে । নাইনটি পার্সেন্ট বার্ণ । 
আমি আমার চুপকথার গোপন দুপুরগুলোকে ঘৃণা করতে শুরু করলাম । মনে মনে বললাম, বৃষ্টি কেন পারলিনা সে আগুণ নেবাতে ?  এত ফোঁটা তোর আছে, এত জলভরা মেঘ থেকে ঝরে পড়লি, এত ভেজালি আমাকে তবুও পারলিনে তাকে আগলাতে  !

২০ জুন, ২০১১

" রঞ্জনা আমি আর আসব না "


"রঞ্জনা আমি আর আসবনা" গত শনিবার ১৮ইজুন আইসিসিআর হলে অঞ্জন দত্তের ৪র্থ বাংলা মিউজিকাল ছবি " রঞ্জনা আমি আর আসবনা " র প্রোমোশানাল রিলিজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সারেগামা এবং তারা মিউজিক চ্যানেল । পুরো টিম অর্থাত লিড বোকালিস্ট অঞ্জন দত্ত , তাঁর পুত্র নীল দত্ত, বেস গিটারে সঙ্কেত ভট্টাচার্য, এক্য়ুস্টিক গিটারে " হিপপকেট" খ্যাত অমিত দত্ত, ফিমেল ভোকালিস্ট সোমলতা আর ড্রামার ( নাম জানা নেই ) সকলেই উপস্থিত ছিলেন । যথারীতি অনুষ্ঠানের শুরুতে অঞ্জন দত্ত " পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব বলেছে পাড়ার দাদারা, অন্য পাড়া দিয়ে যাচ্ছি তাই, রঞ্জনা আমি আর আসবনা ..." বলতে বলতে মঞ্চ কাঁপিয়ে অবতীর্ণ হলেন ।  ঐ সিনেমার গান ছাড়াও বংকানেকশানের বিখ্যাত গান " মাঝিরে, ও মাঝি ( যেটি রূপঙ্কর ও শান গেয়েছিল ) অঞ্জন দত্ত এবং পুত্র নীল গেয়ে মাত করে দিলেন । দুই গিটার ও ড্রামের সহযোগে সোমলতার কন্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত " জাগরণে যায় বিভাবরী" বেশ অন্যরকম লাগল । যদিও জিনস আর কেপরি তে সোমলতা বেশ স্বাছন্দ্য ছিল কিন্তু তার বিশাল লম্বা খোলা চুল একটু বিব্রত করছিল তাকে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । গিটারিস্ট অমিত দত্ত এবং অঞ্জন দত্তের যুগলবন্দী অনবদ্য লাগল সে দিনের সন্ধ্যায় ।   অনেকদিন ধরে ইচ্ছে ছিল অঞ্জন দত্ত মানুষটিকে দেখার । কারণ তিনি একাধারে গান লেখেন, সুর করেন, মিউজিক কম্পোজ করেন, অভিনয় করেন  আর সিনেমা পরিচালনা করেন । এই একজন মানুষ যে কত ক্রিয়েটিভ তা লক্ষ্য করে আসছি বিগত তিরিশ বছর ধরে । কিন্তু এই বয়সে ওনার জীবনীশক্তির তারিফ না করে পারিনা । সামনে থেকে দেখার বড় ইচ্ছে ছিল ।  সাধপূরণ ও হয়ে গেল । " রঞ্জনা আমি আর আসবনা " ছবিটির সাফল্য কামনা করি । ছবির ঘটনা, চরিত্রায়ণ কেমন জানা নেই তবে শুধু গানের জন্যে উতরে যাবে ছবিটি এ আমার বিশ্বাস ! 

৮ জুন, ২০১১

জামা-e-ষষ্ঠী

যষ্টি হাতে জামাইবুড়ো ষষ্ঠী খেতে চায়
টাকের ওপর ছত্র ধরে বুড়ো শ্বশুর তায় ।
কষ্টিপাথর ঘেমো টাকে বিন্দুবিন্দু ঘাম
আগুণ গরম ফলের বাজার আম-লিচু-কালোজাম ।
গুষ্টিশুদ্ধ শালাশালী ষষ্ঠীবুড়ির কৃপা
খুড়োর কলে জামাইবুড়ো মেজাজ ব্রহ্মক্ষ্যাপা
শ্বশ্রূমাতা পষ্টাপষ্টি মেসেজ দিয়ে খালাস
আগুণ বাজার e-ষষ্ঠী বাতিল তত্ত্ব-তালাস ।
সৃষ্টিছাড়া জামাইবুড়ো তুষ্টি খোঁজে নেটে
মিষ্টি হেসে শ্বশ্রূমাতা ওয়েবক্যামে সেঁটে ।
ফষ্টিনষ্টি শালাশালী কষ্টিপাথর টাক
জামাইবাবুর খরচা বাঁচে আনন্দ জয়ঢাক ।
গুষ্টি শুদ্ধ অনলাইনে চটরপটর চ্যাট
জামা-e-ষষ্ঠী তর্ক বৃষ্টি বকর বকম্‌ ভাট  ।