১ জানু, ২০১৮

কেকের আমি কেকের তুমি

শিলাদিত্য ডিসেম্বর ২০১৭

না, না। কেক কি আর সুকুমার রায় সৃষ্ট গোঁফচুরি নাকি? কেকের আমিও নেই বা তুমিও অবান্তর। তবে কেকের সেকাল আর একাল আছে কিন্তু। আর সেই কেক দিয়ে বেকার কে চেনা যাবেই। কেকের বিবর্তনের মধ্যেই কেক বেঁচে রয়েছে নানাভাবে।

বাঙালীর শীতের সঙ্গে কেকের অনুষঙ্গটি কিন্তু বহুদিনের।

কেকমাস আজ মধুমাস, ক্রিসমাস পোষমাসে
একাকার হল হাড়মাস, শীতমাস ভালোবেসে !
বাকী তিনমাস পর পচামাস তাই বাঁচো বেশ কশে
শীত এলে ঝোলাগুড় আর কেক খেও বসে বসে ।

উলটে দ্যাখো শীতকে। পালটে গেছে কলকাতার শীত । মুঠোমুঠো রোদের কণায় একভর্তি শীতের ব্যালকনি । রোদের উঠোনে আরাম চেয়ারে হেলান দিয়েছ । গায়ে ওষ জড়ানো পশমিনা । পায়ে মোজা । ব্যালকনির সামনের ফুটপাথে সারেসারে পথশিশু । আদুড় গা কারো। কারো সোয়েটারের হাত ছেঁড়া । নাক দিয়ে দুরন্ত গতিতে শ্লেষ্মা । ভ্রুক্ষেপ নেই কারো । খেলে বেড়াচ্ছে । রাত হলে ঘরে গিয়ে খাবে দুপুরের দুমুঠো জলঢালা ভাত আর সঙ্গে পাড়ার দোকানের আধখানা গরম ফুলুরি হয়ত । কপালে থাকলে এককুটি চারামাছ ।
আমাদের শিশুরা এসব বোঝেনা । তাদের জীবন জুড়ে টিফিনে কাপ কেক, বার্থ ডে কেক আর শীতকালের ছুতোয় নাতায় বাড়ীর কেক।
কাকার সঙ্গে কেকের কি সম্পর্ক তা জানা নেই তবে কেক শব্দটি এসেছে স্ক্যন্ডেনেভিয়ান শব্দ কাকা থেকে।

"কারো শীতমাস কারো সর্বনাশ' !

কে যেন সেদিন এক আড্ডায় বলছিলেন বাঙালী শীতকালে কফি আর কেক খায়। আসলে এই একটা ঋতুর জন্য আমরা মুখিয়ে থাকি সারাটা বছর। তাই শীতকে কাছে পেতে গরম পানীয় সে কফি হোক কিম্বা স্যুপ তাকে বরণ করে নিই । কারণ এই শীতে গরম পানীয় দেয় সেই ওম যার স্বাদ পেতে তো ঠান্ডার দেশে যেতে হয় বছরের বাকী সময়ে। আর আগেই বলেছি শীতমাস মানেই কেক মাস।
তবে বড়দিনের প্রাক্কাল হোক না হোক, শীত পড়ুক না পড়ুক কেক বানানোর জন্য কোনো ছুতো লাগেনা। সে যুগে আমাদের ঠাকুমা, দিদিমারাই উনুনের মরা আঁচে সারাদিনের রান্নাবান্নার পর এলুমিনিয়ামের হাঁড়ি, লোহার বড় কড়াইয়ে কিম্বা ডেকচিতে বালি বিছিয়ে তার মধ্যে এলুমিনিয়ামের বাটিতে কেক বানাতেন শুনেছি। মায়ের মুখে শুনেছি সে কেক বাড়িতে বসলেও সারাবাড়ি গন্ধে ম ম করত। ঠিক যেন কাঁঠাল বা তালের মত। "এ পাড়ায় বুড়ি মলো, ও পাড়ায় গন্ধ পেল'
তখন নিউমার্কেট থেকে ভ্যানিলা এসেন্স আনা হত। এখন অবিশ্যি পাড়ার দোকানেও মেলে। ওরা তখন কেক ফোলানোর জন্য দিতেন খাবার সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বোনেট। পরে অবিশ্যি আরেকটু সফিষ্টিকেশনের ছোঁয়ায় মা কে দেখতাম বেকিং পাউডার ব্যাবহার করতে। কিছুই না বেকিং পাউডারে সোডি বাইকার্বের সঙ্গে থাকে পটাশিয়াম হাইড্রোজেন টার্টারেট। টার্টারিক এসিডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সোডি বাইকার্ব থেকে সহজেই প্রচুর কার্বন ডাই অক্সাইড বেরোয় তাই কেক বেশ ফ্লাফি হয়। এখন তার আরো বিবর্তন হয়েছে। আমরা কেকের ব্যাটারে বেকিং সোডা বা পাউডার দিই সেই সঙ্গে আভেনে ঢোকানোর ঠিক পূর্ব মূহুর্তে আধা চামচ সাদা ভিনিগার কিম্বা লেবুর রস দিয়ে বেশ করে নেড়েচেড়ে দি। আরো ফুলবে ব্যাটার। এবং এটি কিন্তু ব্রাউনি, মাফিন বা অন্য যে কোনো ধরণের ফ্রুট কেক, পেস্ট্রি বানানোর সময় দেওয়া যেতে পারে। অতএব কেক বানানোর মধ্যমণি হল এই লিভনিং এজেন্ট । কেক কে ফোলানোর বা ঝাঁঝরা করবার অন্যতম উপকরণ। ব্রেডের ক্ষেত্রে যে কাজটি করে ইষ্ট।
আমার মা ডেকচি বা হাঁড়ির মধ্যে বালি পর্বে কেক বানাতে না বানাতেই বাবা একবার রন্ধন পটীয়সী মায়ের জন্য সুদূর বম্বে থেকে নিয়ে এলেন একটি অভূতপূর্ব কেক বানানোর এলুমিনিয়ামের পাত্র। তার নীচে ছোট্ট বালির জায়গা। আর পাত্রের মধ্যিখানটা চোঙাকৃতি ভাবে খোলা। ফলে গ্যাসা অভেনের সুনীল শিখাটি সেই চোঙের মধ্যে দিয়ে তির তির করে প্রবেশ করে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ পাত্রের কেকটিকে বেকড হতে সাহায্য করে। আর নীচের বালি গরম করে নিয়ে তবেই আসল পাত্রটি বসানো হয়। এ যেন প্রিহিটেড আভেনের পূর্বতন প্রযুক্তি। ফলে নীচটাও সুষ্ঠুভাবে তাপ পেয়ে বেকড হয়। সম্পূর্ণ ফুলে উঠলে ওপরটা একটু লালচে ভাব আনার জন্য গ্যাসের সর্বোচ্চ শিখায় মিনিট দুয়েক দিলেই লাজে রাঙা হয়ে ওঠে এই মনোহরা মিষ্টান্ন। মায়ের রান্নাঘরে থাকত একটি উল বোনার সরু কাঁটা। সেটি ফুটিয়ে সন্তর্পণে দেখা হত ভেতরে কোথাও কাঁচা আছে কিনা।
মা কে দেখতাম প্রথমেই সেই বালি চেলে নিয়ে কাঁকর বেছে নিয়ে তারপর সমান করে সেই নীচের ছোট পাত্রে রাখতেন শুকনো বালি। প্রধান পাত্রটিতে বেশ করে মাখন মাখিয়ে নিতেন । আরেকটি বড় বাটিতে হাঁসের ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে চিনি দিতেন যতক্ষণ না চিনি গলে মসৃণ পেষ্ট তৈরী হয়। এরপর খবরের কাগজে চালনী দিয়ে পরিমাণ মত ময়দা ও বেকিং পাউডার একসঙ্গে চেলে নিতেন যাতে সম্পূর্ণ মিশে যায়। এবার সেই ময়দাটিকে পরিমাণ মত গলানো মাখন দিয়ে মেখে নিতেন ঠিক যেমন করে ময়দা ময়ান দিয়ে মাখা হয়। এরপর সেই ময়দা মাখা টি ধীরে ধীরে ডিম-চিনির মিশ্রণে দিতেন আর ফ্যাটাতেন। সব শেষে ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে ঐ পাত্রে ঢেলে দিয়ে আগে থেকে গরম করে নেওয়া বালির পাত্রে বসিয়ে দিয়ে গ্যাস কমিয়ে রাখতেন প্রথম মিনিট দশেক। এরপর আগে থেকে জলে ভেজানো কাজু-কিশমিশ পাত্রের ঢাকা খুলে ছড়িয়ে দিতেন কেক মিশ্রণের ওপরে।

এবার শুরু ধুকপুকুনি। ঠিক না ফুললে লজ্জায় মাথা কাটা যাবে। তলা পুড়ে গেলে লোকে নিন্দে করবে। সোডা কম হলে ভেতর কাঁচা থাকবে। এইসব কানাঘুষো শুনতে শুনতে আমিও কেমন করে ঐ বিশেষ পাত্রটিতে অবলীলায় কেক বানানো শিখে গেলাম। একটু গ্যাসের আঁচ বাড়ানো আবার কমানো আর সব শেষে দুমিনিট হাই ফ্লেমে ওপরটায় রং ধরানো। ব্যাস! এই কথা? হ্যাঁ, এই টুকুই। কেক বানানোয় এমন কিছু হাতিঘোড়া রকেট সায়েন্স এর প্রযুক্তি নেই। কেক বানানোয় আহামরি কিছু উপকরণ ও লাগেনা। শুধু আছে ঠিকঠাক পরিমাপ আর একাগ্রতা।

মা কে অবিশ্যি দেখতাম এই রেসিপি কে সামান্য ইম্প্রোভাইজ করতে। শীতকালে কমলালেবুর খোসা শুকিয়ে কেকের ব্যাটারে মিশিয়ে দিলে তৈরী হয় অরেঞ্জ ফ্লেভার্ড কেক। আর কাজু কিশমিসের সঙ্গে মা দিতেন কচকচি বা পেঠা। দিল্লীতে রাস্তায় খুব বিক্রি হয় যেটা অর্থাত ঘন চিনির রসে উগরে নেওয়া চালকুমড়োর মেঠাই বা মোরব্বা । এখন যা সুদৃশ্য রঙে ফাইন কুচোনো টুটি ফ্রূটি। শপিং মলের গালভরা নাম। এইভাবে গ্যাস আভেনে কেক শিখে এসে শ্বশুরবাড়িতে দেখলাম শাশুড়ি মা কে ইলেকট্রিক গোল আভেনে কেক বানাতে। আমার অসুবিধে হচ্চে দেখে প্রচুর খুঁজলাম বাজারে। সেই বোম্বাইওয়ালি স্পেশ্যাল কেকপাত্রের দেখা পেলাম না। "আমি তাঁরেই খুঁজে বেড়াই যে রয় মনে আমার মনে...'
অগত্যা বাবা খুঁজে পেতে এনে দিলেন হাতিবাগান বাজার থেকে। তদ্দিনে বাঙালীর মডিউলার কিচেনে রমরমিয়ে জায়গা করে নিয়েছে ওটিজি (আভেন, টোষ্টার ও গ্রিলার) বা একই অঙ্গে ত্রিরূপী বৈদ্যুতিক যন্ত্র। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে এসেছে মাইক্রোওয়েভ আভেন। সেখানেও কনভেকশান মোডে কেক বেকিং হয় তবে সেটি কে আমি বলি কেকের অপভ্রংশ। যারা অভেনে কেক বেক করতে অভ্যস্ত এবং দক্ষ তাদের কাছে মাইক্রোওয়েভে কেকে বেকিং নিছক ছেলেখেলা । কারণ আভেনে কেক বেকিং এর সেই স্বাদ বা গন্ধ কোনটি থাকেনা এতে। বরং দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে। সময়ের অভাবে চটপট কেক মিক্স ফেটিয়ে বসিয়ে দিতে পারলেই কেক হয় এতে।
এখন ছোট কেক বানালে ওটিজি আর বড় বানালে গ্যাস আভেনে বেক করি। আর কেকের টপিং এ আইসিং দিয়ে অযথা খাটুনি এবং ক্যালরি বৃদ্ধি আমার নাপসন্দ। বরং বাড়িতে হঠাত অতিথি আপ্যায়ণে মিক্সার গ্রাইন্ডারের ছোট্ট ব্লেন্ডারটিতে প্রথমে মাথা কাটা এককাপ চিনি গুঁড়ো করে তার মধ্যেই দুটো ডিম ভেঙে দি। হাই স্পিডে মিক্সি চালিয়ে মসৃণ মিশ্রণ রেডি। এবার একটি স্টিলের গ্লাসে এককাপ ভর্তি ভর্তি চেলে নেওয়া ময়দা আর দু চা চামচ বেকিং সোডা নিয়ে মিক্সি থেকে ডিম চিনির মিশ্রণ গ্লাসে ঢালি আর কেক ফ্যাটানোর বিশেষ বিটার দিয়ে যে কোনো একই দিকে ফেটাই । যে পাত্রটিতে কেক বেকিং হবে সেটি টিনের হলে খুব ভাল। সেটি তে দু-টেবিল চামচ মাখন গলিয়ে মাখন টি গ্লাসের মিশ্রণে দিয়ে আরো ফেটাই। এতে কি হয় যে পাত্রটিতে কেক বেকিং হবে সেটি খুব ভাল করে গ্রিজড বা তৈলাক্ত হয়ে যায়। এবার মোট দুশো বার হওয়া চাই এই ফ্যাটানো। এবার দুচামচ যেকোনো এসেন্স (ভ্যানিলা, পাইন্যাপল, অরেঞ্জ) মিশিয়ে বেকিং পাত্রটিতে পুরো মিশ্রণটি ঢেলে দি। এবার দু ফোঁটা হোয়াইট ভিনিগার অথবা লেবুর রস দিয়ে আবার নেড়ে চেড়ে প্রিহিটেড ওটিজি তে ২০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে মাঝখানের র‍্যাকে পাত্রটি বসিয়ে দি।
ভরা থাক হাতের যাদু সুধায় কেকের এই পাত্রখানি! এভাবেই তৈরী হয়ে যায় চটজলদি কেক।
ওটিজির চোখরাঙানিতে রাগে, ক্ষোভে ফুলতেই থাকে কেক। ওপর থেকে আলগা হাতে ছড়ানো ড্রাইফ্রুটস এর মর্মে যেন রং লাগে, আমার মনেও চিন্তা জাগে ঠিক সেই মায়ের যেমন লাগত।সব অনিশ্চয়তার শেষ কিছু পরেই।
উলের কাঁটা দিয়ে ফুটিয়ে যখন দেখি কেক আর নেই কাঁচা, তখন দুহাত তুলে পুচ্ছটি তোর উচ্চে তুলে নাচা! এমনি অবস্থা হয় এহেন বেকার হোম মেকারের।
বেশি পরিমাণে কেক বানালে হ্যান্ড ব্লেন্ডারের সাহায্য নি। তবে পদ্ধতি হরে দরে একই । চারটে ডিম হলে আগের মাপের দ্বিগুণ সবকিছু। শুধু একটা করে ডিম বেশী দিলে কেক সুস্বাদু হয়। অর্থাত চারটে ডিমে চারকাপ ময়দা, চারকাপ চিনি, চার টেবিল চামচ গলানো মাখন আর একটি ডিম বেশী। ময়দা আর চিনি এক ধরণের কাপে মাপতে হবে। শুধু ময়দা উঁচু করে নিতে হবে আর গুঁড়ো করা চিনি কম কম মাথা কাটা কাপে। তবে কেকের মিষ্টতা ঠিক থাকবে। অতিরিক্ত চিনিতে কেক রসালো হয়ে ভিজে যায়। এবার এই কাপের মাপটি বিশাল কফি মাগ হলে হবেনা আবার ছোট্ট চায়ের পেয়ালা হলেও হবেনা। মাঝারি সাইজের কাপ হতে হবে। আর বাকীটা? এক টুসকি মনোযোগ আর হালকা অধ্যাবসায়। সুখী গৃহকোণে আনন্দের জোয়ার। গৃহিণীর কনফিডেন্স লেভেল একধাপ বাড়ানোয় এই রেসিপির জুড়ি নেই। আমার কাছে কেক এক সুচারু শিল্প যা নিমেষেই সত্য হয়ে প্রতিভাত হয় চোখের সামনে। তাই শীত আসুক না আসুক, ঠান্ডা পড়ুক না পড়ুক সব মাস‌ই কেক মাস।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে বাজার আর ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। সবকিছুই হাতের নাগালের মধ্যে এখন। ছত্রে ছত্রে কেকের হরেকরকম রেসিপি ছড়ানো ইন্টারনেটে। সেগুলোকে নিজের মত করে নিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারলেই হল। শুধু চাই তিন "' এর মেলবন্ধন। পছন্দসই পাত্র, সঠিক পদ্ধতির পরিমাপ আর পর পর প্র্যাকটিস চাই সফল কেক তৈরীর পেছনে। রাম কেক থেকে প্লাম কেক, ওয়ালনাট থেকে আমন্ড কেক, চকোলেট চিপস দেওয়া থেকে মিক্সড ফ্রুট কেক যাই বানানো হোক বেসিক পন্থা একটাই। বৈচিত্র্য টপিংয়ে, হরেক কিসিমের শুকনো ফলের বিচিত্রতায়। আর এখন বিশ্বায়নের বানভাসি শপিং মলে শুকনো কিউয়ি থেকে ক্র্যানবেরি সবকিছুই মেলে অতএব সেই সত্য যা রচিবে তুমি!
ছোটবেলার স্মৃতির সরণী বেয়ে কেবল ছিল নিউমার্কেটের ডি গামা, নাহুমস, ফারপো, ফেরিনি, গ্রেট ইষ্টার্ণ এর কেক । তারপর কলেজবেলার ফ্লুরিজের কেক। এরপর জলযোগের কেক। মনজিনিস বদলে মিও আমোর, কেকস, কুকি জার, ব্রিটানিয়া, সুগার অ্যান্ড স্পাইস, বিস্কফার্ম, আনমোল, রাজা, বাপুজি, নানা ব্র্যান্ডের কেক। এছাড়াও রয়েছে স্থানীয় সব বেকারির কেক। খিদিরপুরে যে লোকটি প্রতিদিন আমার বাড়িতে ফ্রেশলি বেকড ব্রেড দেয় প্রতিবছর শীতে সেও একবার অন্ততঃ কেক দিয়ে যাবেই। ইস্কনের কৃষ্ণপ্রেমীদের গোবিন্দা বেকারীতেও কেক বিক্রি হচ্ছে। হ্লদিরামও নিরামিষ কেক বানাচ্ছে তবে এগুলি ডিম ছাড়া। সেটি কে আদৌ কেক বলা হবে কিনা সেটা বেশ সংশয়ের ব্যাপার। কারণ যাকে কেক বলছি আমরা তার প্রধান অঙ্গ হল ডিম।
তবে একটাই হটকেক বার্তা। আগে বঙ্গ ললনারা শীতকালে শুধু পিঠে বানাতেন এখন টেলিভিশন আর ইন্টারনেটের দৌলতে তারা কেকপিঠেতেও সামিল হয়েছেন। তাই এই শীতে কেককে অন্তর্ভুক্ত করা যেতেই পারে বিদেশী পিঠে হিসেবে পৌষপার্বণে। আর রসের সাগরে ভাসমান রসবড়া, ক্ষীর সমুদ্রে ভাসমান দুধপুলি আর তুলতুলে নরম পাটিসাপটার পাশাপাশি গরম কেক পিঠের মৌতাত কিন্তু জমিয়ে দেবে শীতকাল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। 
 

কোন মন্তব্য নেই: