৩১ জানু, ২০১৮

ও চাঁদ !!!

রেকটু বাকী। কিসের? চাঁদটাকে এইবারে পুরোটা ঢেকে দিল রে! কে ঢেকে দিল? কে আবার?পৃথিবীকে ঘুরতে ঘুরতে যখন চাঁদ ও সূর্যের মাঝে চলে আসে তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে। কলায় কলায় প্রকাশিত পূর্ণচন্দ্রের ষোলো কলা পূরণ হল আর তারপরেই ক্রমে ক্রমে তা অমাবস্যার চাঁদের মত হয়েও গেল। ব্যাস্! আর দেখা গেল না চাঁদটাকে। চাঁদ তুমি এবার সামলে রেখো তোমার জোছনা কে। নয়ত হবে পূর্ণগ্রাস। 
নিথর নিস্পন্দ প্রকৃতি। গাছের পাতা নড়ছেনা। পাখীরা বাসায় ফিরে গেছে অনেক আগেই। তাদের নেই কোনো কিচিরমিচির। গরু বাছুর, ছাগল কুকুর যে যেখানে ছিল তারাও কেমন করে বুঝতে পারে গ্রহণের পূর্বাভাস। ভরা পূর্ণিমার এ কি বিষণ্ণতা? অমাবস্যার মত ঘুটঘুটে অন্ধকার চারিদিক। কোথায় গেল আমাদের চন্দ্রবিলাস? পূর্ণচাঁদের মায়া? ও আমার চাঁদের আলো! আমার পূর্ণশশী, তোমার দেহের সব কলঙ্ক মোচন হয় এভাবেই।
চন্দ্র শুনেছি মাতৃকারক গ্রহ। তোমার কলঙ্ক মোচনের সঙ্গে সঙ্গে দুনিয়ার সব মায়েদের কলঙ্ক মুছিয়ে দাও হে চাঁদ। কেউ বাজাল শাঁখ। কেউ ফেলে দিল রান্নাঘরের ঘড়া ভর্তি জল। কেউ রান্নাবান্না করবে না। কোনো শৌচালয়ে প্রবেশ নিষেধ। মল-মূত্র ত্যাগ চলবেনা। কত্ত নিয়ম গেরণ লাগলে।  ভরা পোয়াতি মায়েরা কেউ সেলাই ফোঁড়াই করবে না। তাহলে সন্তানের অঙ্গের কোথাও না কোথাও সূক্ষ্ম ছিদ্র থাকবে। কেউ খাবার মুখে দেবে না। খাবারদাবারে তুলসীপাতা ছাড়াবেই ঠানদিদিরা। তারপর শুদ্ধ হবে গঙ্গার জল ছিটিয়ে। চাঁদে গেরণ লেগেছে। সাইরেন বাজল বুঝি। গ্রহণ লাগল। গ্রহণ ছাড়লে আবার রান্না খাওয়া, জল ভরা। ওরে চাঁদ আছে বলেই আছে আমাদের মন। চাঁদ আছে বলেই আমাদের যত আলো-আঁধারি। একে মাঘী পূর্ণিমা তায় চন্দ্রগ্রহণ। এর তিথিমাহাত্ম্য নাকি জোরালো। তাই তো এ চাঁদ যে সে নয়। সুপারমুন বা নীলচাঁদ। তবে চাঁদ মোটেও নাকি নীল হবে না। জ্যোতির্বিদরা কত ছবি তুলবেন। চান্দ্র গহ্বরের গুরুত্ব অপরিসীম এঁদের কাছে।
সৌরজগতের গঠন পর্বে প্রচুর গ্রহাণু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। পরে এদের বেশির ভাগকেই নিজেদের বুকে টেনে নেয় দেবগুরু বৃহস্পতি ও শনি। বাকিরা এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সেগুলি মাঝেমধ্যেই ছিটকে চন্দ্রের গায়ে গিয়ে আছড়ে পড়ে। পৃথিবীর দিকে উল্কা ছুটে এলে বায়ুমণ্ডলে ঢোকার পরেই তা দ্রুত জ্বলে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু চাঁদে বায়ুমণ্ডল না-থাকায় তুলনায় ছোট মাপের উল্কা বা গ্রহাণুও প্রবল গতিতে ছুটে গিয়ে আছ়ড়ে প়ড়ে এবং প্রবল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তৈরি করে নানা মাপের গহ্বর।তাই সদ্যজাত গহ্বরের ছবি উঠছে এখন। কি বাঙ্গালি বলবেন না? হ্যাপি লুনার এক্লিপ্স কিম্বা হ্যাপি ওয়ালি সুপার মুন? কিম্বা ব‌ইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে সুপারমুনের সঙ্গে সেল্ফি তুলে পোষ্টাবেন না? থেমে আছেন কেন? এই তো সুযোগ ছবি পোষ্টানোর।

কোন মন্তব্য নেই: