মুক্তি
তোমায়
অনেকদিন দেখিনি। এই ভিডিও
কলে যেমন দেখছি তেমন নয়। তোমার
ছোঁয়া পেতে চাইছে মন। আজকাল
বড়ো মন কেমন করে তোমার জন্য।
সেই কবে যেন ছুঁয়েছিলে আমায়।দুজনে
পাশাপাশি বসে একে অপরের
শ্বাসে-প্রশ্বাসে,
হাসি-কান্নায়,
সুখের
প্রলাপে দুঃখের ঘায়ে একসঙ্গে
মলম লাগিয়ে ঠান্ডা হতাম মনে
পড়ে তোমার? সেই
কাঠি আইসক্রিম নিয়ে নন্দনে
গাছের নীচে? কিম্বা
মাল্টিপ্লেক্সে মুভি দেখে
হতাশ হয়ে কফিশপে ঢুকে?
আমার হাত
থেকে সিগারেটের বাট টা ছুঁড়ে
ফেলে দিয়ে তোমার রাগ দেখানো?
অথবা আমার
গল্পলেখার সময় তোমার খুনসুটি?কতবার
গল্পটা টাইপ করে শোনাতেই ছুঁড়ে
ফেলে দিয়েছিলে? মনে
পড়ে? কপট
রাগ দেখিয়ে কথা বন্ধ করে দিনের
পর দিন থেকেছি আমরা। তবুও
পাশাপাশি তো থাকতাম। এক বিছানা,
এক মাদুর,
এক সোফা
শেয়ার করে রাগে অনুরাগে আড়িআড়ি
ভাবভাব খেলেছি আমরা দিনের পর
দিন। হোয়াটস্যাপে তোমার বাড়ি
ফেরার দেরীতে রাগের ইমোজি
দেখিয়েই মনে করিয়েছি রাতে
ডিনারের পরে সেই আইরিশ ক্রিম
খোলার কথা?ব্যালকনিতে
বৃষ্টির ছাঁট এলেই তুমি কেমন
গান ধরতে মুক্তি! কতদিন
তোমার সামনে বসে গান শুনিনি।কতদিন
তোমার সঙ্গে লেকে হাঁটতে
যাইনি।তোমার পেটে এক পেগ ভদকা
পড়লেই তুমি বলতে এমনি বেঁধে
বেঁধে থাকবে আমার সঙ্গে কিন্তু
আজ কতদিন হয়ে গেল মুক্তি,
আমরা দুজন
দুজনকে ছেড়ে ছেড়ে রয়েছি। আমি
ভালো নেই মুক্তি। কবে আবার
সেই বিদ্যাপতির ভরা বাদর
শোনাবে আমায়? কবে
আবার তোমার হাতে খাব আমার
প্রিয় সেই বালিনিজ কফি?
ওপরে ফেনার
পরে ফেনা আর নীচে দুধ। আর সেই
আলতো হাতে তুমি তার ওপর স্প্রিংকল
করে দেবে কোকো পাউডার?
আমি লোভ
সামলাতে না পেরে একটা ছবি
তুলেই ফেসবুকে পোস্ট করে দেব
আর উন্মাদের মত গরম সেই কফিতে
চুমুক দিয়েই আমার জিভ পুড়িয়ে
ফেলব। তুমি তখন সেই জিভ কে
আরাম দেবে নিজের মুখের ভেতর
পুরে। কিন্তু এখন তা আর হবেনা
মুক্তি। এভাবে অনেক দিন তোমায়
ছেড়ে আমাকে থাকতে হবে। সেই
হ্যারি বেলাফন্টের গানের
সেলরের মত। আমার লিটল প্রিন্সেস
আমার কাছে আবার কবে আসবে জানিনা
কিন্তু আমি তাকে খুব মিস করছি।
" বাট
অ্যাম স্যাড টু সে... অন
মাই ওয়ে... আই
উইল বি ব্যাক ফর মেনি অ্যা
ডে...”
আবার
আমাদের পাহাড় চুড়োয় সোনাগলা
রোদ উঠবে রোজ আর আমি আবারো সেই
পালতোলা জাহাজটা নিয়ে তোমার
কাছে ফিরবই মুক্তি। বৃষ্টির
পর শহরের গোধূলি আকাশে আবারো
বিশাল রামধনু দেখব দুজনে
একসাথে, শুধু
তুমি যদি আমার পাশে থাকো। অনেক
দিনের জন্য আমরা একে অন্যের
কাছে ফিরব না ঠিকই তবুও তোমায়
তেমন করেই ভালোবেসে যাব।
আবার
আমরা একসঙ্গে ভীড় বাজারে যাব।
মাছ মাংস কিনব। ফিরে এসে রান্না
করব দুজনে। হাওয়াতে তখন ফুলের
গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে ঠিক আগের মতন,
দেখো
মুক্তি।সবাই আবার হাসবে,
নাচবে,
গাইবে।
নন্দনে আবারো আমি গল্প কবিতা
পড়তে যাব। তুমি ছবি তুলে দেবে।
গড়িয়াহাটের ফুটপাথে হকারদের
সঙ্গে তুমি বচসা করে বারগেইন
করে জিতবে। আমি আওয়াজ দেব
তোমায়। দেখো আবার সব পারব আমরা
এক সঙ্গে মিলে।
ভালো
থেকো মুক্তি। এই চিঠি কোন
ঠিকানায় উড়িয়ে দিলাম জানিনা।
তবে আপাততঃ প্রযত্নে ফেসবুকে
রইল। তোমার উত্তরের অপেক্ষায়।
ইতি
তোমার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন