২৬ মার্চ, ২০২৩

গঙ্গোপাধ্যায়দের কিংবদন্তীর হেঁশেলে / ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

 

ছবি সূত্রঃ ইরাবতী ডট কম 

গঙ্গোপাধ্যায়দের কিংবদন্তীর হেঁশেলে

ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়

বাজার সফর’ বইতে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় সেই কবে যেন লিখেছিলেন, ‘ঘুম থেকে উঠে অনেকে ঈশ্বরের কথা ভাবেন, কেউ বা তক্ষুণি করার মতো কাজ, আগের থেকে ঠিক করে রাখেন৷ আমি তো ভাবি আজ কী খাব? তার মানে আজ কী বাজার করব? কেমনভাবে করব? এই মন দিয়ে বাজারে গেলে দাউ দাউ আগুন বাজারকেও মনে হবে শীতলা এবং রহস্যময়৷’

এমন রসরচনায় নাল ঝরে আজও আমার। ঠিক যেভাবে লিখেছিলেন শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, তার মধ্যে দিয়ে বাঙালির বাসনার সেরা বাসাটা এখনও আমাদের অন্তরে, যাপনে আর জিভের ডগায় সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমি বলে না। সব বাঙালীরই এই রসনা সংস্কৃতি বুঝি উথলে ওঠে সেই আদিম কাল থেকেই। আসলে রোজ ভোরে উঠে আমাদের সবার এই রকম একটা মন তৈরি করার দরকার।

তাঁর লেখাতেই রয়েছে...

"ভাত ডাল, ভাজা এবং কাটা পোনা এই চেনা ছকের খাবার থেকে বাঙালি কবে বেরোবে?’ আমি নিজে অবশ্য এই ছকের বাইরের নানান খাওয়া খেতে বরাবরই পছন্দ করি৷ হয়ত একটা পদই খেলাম, মানে ধরুন কেবল মাত্র বাটি চচ্চরিই খেলাম, তার পরের দিন হয়তো আমি খেলাম লাল শাক এবং বড়ি, আবার তার পরের দিন হয়ত আমি খেলাম আড় মাছের কালিয়া, তার পরের দিন হয়তো খেলাম লইট্যা মাছের ঝুড়ো, আর তারও পরের দিন খেলাম ধোকার ডালনা যেটা আবার ছোলা সেদ্ধতে পরিকীর্ণ৷ এই রকমভাবে আমার মনে হয় যে যদি একটা নিশ্চিদ্র এবং নিখুঁত পরিকল্পনা করা যায় যে অমুক দিন এক পদই খাব এবং এই দিয়ে খাব তাহলে সেই এক পদী আহারই হয়ে উঠবে প্রায় যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞের সমান৷"


সাহিত্যিক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভোজন রসিকতা সাহিত্যমহলে সর্বজনবিদিত। আদ্যোপান্ত ফুডি এই সাহিত্যিকের হেঁশেল ঘরের সেই পরম্পরা আজো বহন করে চলেছেন তাঁর সুযোগ্যা কনিষ্ঠা কন্যা ডক্টর ললিতা চট্টোপাধ্যায়। ডাক্তারির ব্যাস্ত কর্মজীবন সামলিয়ে তিনিও তাঁদের গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের ঘরানায় মাংস রাঁধেন এখনো। ললিতার রান্নাবান্নার শখ তাঁর মা ইতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। বড় মেয়ে মল্লিকা অত রাঁধিয়ে নন তবে ইতিদির বেশির ভাগ জবাবের খুঁটিনাটিগুলো মলিদিই দিলেন। এবং তার থেকে প্রমাণিত হল তিনিও বেশ রান্নাবান্না জানেন এখনো। আর আড্ডা দিতে গিয়ে মনে হল পুরো গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার একসময় তাঁদের এই কিংবদন্তীর হেঁশেল টিকে পরিপূর্ণতায় ভরিয়ে রাখতেন পঞ্চব্যঞ্জনের সুঘ্রাণে।

এই রান্নাবাটি নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে চুলোচুলি হত খাদ্যরসিক শ্যামলবাবুর। হঠাত অসময়ে, নিদারুণ গরমে পাঁচ, 'রকম মাছ এনে হাজির করে উনি বলতেন সেগুলি এখুনি রান্না করে দিতে। আর অচেনা, অজানা সব মাছ কি দিয়ে, কেমন করে রাঁধতে হবে তা ও তিনি জেনে আসতেন বাজারের লোকজনের কাছ থেকে। ইতি দি বিরক্ত হয়ে বাপের বাড়ি যাবার ধান্দা করতেন। বলতেন, বরং কাল কাজের লোকেরা এসে কেটেকুটে, ধুয়ে বেছে দিক। আমি রান্না করে দেব। কিন্তু শ্যামলবাবুর যে সেদিনই খেতে হবে সেই টাটকা মাছ।

সেই মতস্যসূত্র ধরেই আবার দু'জনের ভাব‌ও হয়ে যেত কিছু পরেই। রান্নার সুঘ্রাণে ভরে উঠত তাদের হেঁশেল। আড়ি আড়ি ভাব ভাব। আর সেটা খাওয়াদাওয়া নিয়েই। তারমানেই বুঝে দেখুন কেমন খাদ্যচর্চার রমরমা ছিল তাঁদের হেঁশেলে। আর জন্মসূত্রে যিনি বাংলাদেশের খুলনার আর কর্মসূত্রে বরিশালের বানোরী পাড়ার তাঁর তো এমন হতেই পারে।


মলি দি বললেন, বাবাদের পূর্ববঙ্গের রান্নায় একফোঁটা মিষ্টি পড়ত না। আর মা নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের মেয়ে। মা রান্নায় একটু করে চিনি দিতেন। ব্যাস! বাবার সেটাই মনে ধরে গেল। মায়ের হাতের রান্না খেতে বাবা সবচেয়ে পছন্দ করতেন। বাবার সব রান্নায় চাই নুন-মিষ্টির পারফেক্ট ব্যালেন্স।

হোটেলের রান্না বাড়িতে এনে বাবা মা'কে বলতেন, খেয়ে বল, কি করে রেঁধেছে এরা? মশলাপাতি কী দিয়েছে?আমাকে ঠিক এমনি করে বানিয়ে দাও।

বললাম, ইতি দির হাতের কোন্‌ পদটি এ বাড়ির অথেন্টিক ডেলিকেসির পর্যায়ে পড়ে? মলি দি লালায়িত হয়ে বললেন, কচ্ছপের মাংস। মা যে কী ভাল রাঁধতেন! গোল গোল আলু, মূলো, কচ্ছপের ডিম আর মাংস একসঙ্গে প্রেসার কুকারে দিয়ে কষতেন মা। আর রাঁধতে রাঁধতে আমাদের চাখা আর সেই মাংস টেবিলে সার্ভড হবার আগেই ফুরিয়ে যেত। আরেকটা নিরামিষ রান্না বাবার বড্ড প্রিয় ছিল কচি লাউশাকের ডগা দিয়ে সাদা ঝোল। বললাম সেটা কেমন?

তেলের মধ্যে পাঁচফোড়ন আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে আলু একটু ভেজে নিতে হয়। তারপর লাউডগা দিয়ে নুন দিয়ে সেদ্ধ হয়ে এলে দুধ, ময়দা আর পোস্তবাটা দিয়ে নামাতে হয়। আর সামান্য চিনি। আর বাবা খেতেন গন্ধরাজ লেবু দিয়ে মূসুর ডাল। স্যুপের মত চুমুক দিতেন ডালে। মা রান্না করতে ভালবাসতেন আর বাবা তাড় কদরও করতেন। আর তাই বুঝি রান্নাটা মায়ের নেশা হয়ে উঠেছিল। বাবাদের মামাবাড়ি ছিল ঢাকার বিক্রমপুরে। সেখানে রান্নায় মিক্সড কালচার। ওদের হিট রেসিপি হল শোল-মূলো। ওরা ব্রেকফাস্টেও মাংসভাত খেতেন শুনেছি।

এছাড়াও মায়ের হাতে পিঠেপুলি, পাটিসাপটা, রাঙ্গা আলুর পান্তুয়া, রসপুলি দারুণ লাগত আমাদের। মা ছাঁচে ফেলে অপূর্ব ক্ষীরের সন্দেশ করতেন।

বললাম আর আপনাদের বাড়ির রোজকার রান্না ? মানে শ্যামলবাবু যখন সাহিত্যজগতে বেশ উদীয়মান, আনন্দবাজার পত্রিকার দফতর যাঁর কর্মজগত অথবা যুগান্তর-অমৃতবাজারে যখন চাকুরীরত সেই সময়টায়?

ইতি দি জানালেন, ওল-চিংড়ি কিম্বা মোচা-চিংড়ি, কাঁচা ইলিশের ভাপা, মৌরলা, কাচকি কিম্বা আমুদি মাছের চচ্চড়ি, তেল কৈ, কচুর লতি, কচুর শাক, কালোজিরে কাঁচালঙ্কা আর বেগুন দিয়ে ইলিশের পাতলা ঝোল কিম্বা মাছের মাথা দিয়ে ডাল যেমন হয় সব বাড়িতে। বললাম ইলিশের ভাপার রেসিপিতে বিশেষ কিছু দিতেন ? বললেন, নাহ্! কাঁচা মাছ নুন, সর্ষে কাঁচালঙ্কা বাটা দিয়ে ম্যারিনেট করে সামান্য নারকোল বাটা দিতাম। এবার সর্ষের তেল আর চেরা কাঁচালঙ্কা ছড়িয়ে বন্ধ কৌটোয় পুরে মিনিট পাঁচেক। ব্যাস!

আর মেয়েদের হাতের রান্না ? মলিদি বললেন, এ ব্যাপারে মা'কেই বাবা হায়েষ্ট নম্বর দিতেন। আর আমরা দুই বোনে রাঁধলে খুঁতগুলো ধরিয়ে দিতেন পরিষ্কার ভাবে। কোনো রাখঢাক নেই সে ব্যাপারে। বাবা মাটন পছন্দ করতেন একটু শক্ত, তবে ছিবড়ে না। প্রেসারে গলিয়ে ফেললে চলবেনা। মাটন কারিতে মা সামান্য আদা, পিঁয়াজ, জিরে, গোলমরিচ বাটা দিতেন। মাংস রিচ হবে না গুচ্ছের পিঁয়াজ, আদা, রসুন পড়বে না।

বললাম ইতি দির হাতের মাটন কারির স্ট্যু এর খুব সুনাম শুনেছি। স্পেশ্যাল টিপস আছে কিছু? বৃদ্ধা বেশ আত্মপ্রত্যয়ের সঙ্গে স্মৃতির সরণি বেয়ে চললেন খানিক।

ধর ৫০০ গ্রাম খাসির মাংস সেদ্ধ করে, গোল গোল আলু কেটে সামান্য আদাবাটা আর চার টুকরো করা দুটো কাঁচা পিঁয়াজ দিয়ে ফুটবে। এবার সেই উপাদেয় স্ট্যু উনি রোজ রাতে খাবেন কড়া করে টোষ্ট করা পাউরুটির সঙ্গে।

আর রোজকার রুই বা কাতলার ঝোলের রেসিপি? বললেন, সব বাড়িতে যেমন হয়। জিরে ফোড়ন, আদা-জিরে বাটা দিয়ে, তেমনি। অর্থাৎ বাড়ির রান্নাই তবে বেশি ভালবাসতেন তিনি।

মলি দি বললেন, সে তো বটেই। আমাদের ছোটবেলায় বাইরের খাবারের চল কম ছিল। তবে আমরা সপরিবারে জিলিপি-সিঙ্গাড়ার পাশাপাশি চাইনিজ খেতাম চাঙোয়ায় বা ওয়ালড্রফে গিয়ে। বাবা তখন আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরী করতেন। ১৯৭২ সালে কলকাতায় পাকাপাকি ভাবে আসার আগে আমরা থাকতাম ক্যানিং লাইনের চম্পাহাটিতে। পত্রিকার অফিসের উল্টোদিকে তৃপ্তি বলে একটা অসামান্য রেস্তোঁরা ছিল। বাবা ফেরার পথে আমরা দুই বোন আর মা সকলে মিলে খেতে যেতাম সেখানে। গিয়ে দেখতাম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায় কে। জমিয়ে আড্ডা হত খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে। তারপর খেয়েদেয়ে আমরা শেষট্রেনে বাড়ি ফিরতাম চম্পাহাটির বাড়িতে ।

দুই মেয়েই জানালেন আরেকটি রান্নার কথা। চিতলমাছের গাদায় খুব কাঁটা তাই গাদা ঘষে নিয়ে আলুসেদ্ধ দিয়ে মেখে ধোঁকার মত কেটে পিস করে। ওরা বলেন মুঠিয়া। তাঁদের বাবার পছন্দের ডিশ । এছাড়া শুক্তো, আলু-উচ্ছে-কুমড়ো ভাজা ছিল খুব প্রিয় পদ। থোড় দিয়ে চিংড়ি করতেন মা। বললাম শিগগির রেসিপি দিন।

মলি দি বললেন, থোড় কেটে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এবার তেলে পাঁচফোড়ন আর লঙ্কা দিয়ে চিংড়িমাছ দিয়ে নাড়াচাড়া করে থোড় সেদ্ধ দিয়ে সামান্য মিষ্টি আর নামানোর সময় নারকোল কোরা ছড়িয়ে দিতে হবে। আর আমাদের বাড়িতে শুক্তোয় আমরা দুধ, আদা আর পোস্তবাটা দি।

আপনারা দুই বোন বাবা কে রান্না করে কী খাইয়েছেন?

মলি দি বললেন, আমি কোনোদিন কোনো ডিফিকাল্ট রেসিপিতে অভ্যস্ত ন‌ই। সে ব্যাপারে আমার বোন পারদর্শী। আমি খাওয়ালে স্রেফ মাংস-ভাত।

এই খাওয়াদাওয়া নিয়ে আপনাদের হেঁশেলের কোনো স্মরণীয় ঘটনা?

তাহলে তো বলতে হয় সরস্বতী আর লক্ষ্মীপুজোর কথা। বছরে এই দুটোদিন হৈ হৈ করে কব্জ্জী ডুবিয়ে সবাই খিচুড়ি ভোগ, পায়েস খেত। মায়েরা সব জায়ে জায়ে মিলে একসঙ্গে রান্না করতেন। লক্ষ্মীপুজোর ভোগে পরিবারের রীতি অনুযায়ী বাড়ির লোকেদের জন্য মোচা দিয়ে চিংড়ি , লালশাক ভাজা আর মুগের ডাল হত। সরস্বতীপুজোয় হত জোড়া ইলিশ। আর ওদিকে বাবা আর কাকাদের জন্য হত স্পেশ্যাল মাংস, ভাত। পুজো শুরু হয়েছে। বাবারা উশখুশ করতেন কখন পুজো শেষে ওরা মাংস ভাত খাবেন। এমন শুনেছেন কোনোদিন? মলি দির ট্রু কনফেশন।

আচ্ছা আদ্যোপান্ত খাদ্যরসিক এই মানুষটি নিজে রেঁধেছেন কোনোদিন?

যদ্দূর মনে পড়ে একবার মোটে মাছের ঝোল রেঁধেছিলেন। ইতি দি স্মৃতি হাতড়ে বের করে আনলেন। সেই প্রথম আর সেই শেষ।


ওনার বিদুষী কন্যা ললিতা এখনো রন্ধনে দ্রৌপদী, পেশায় ডাক্তার। ফোন করতেই বললেন, বাবার জন্য স্পেশ্যাল লালমংস হত বাড়িতে। খুব স্বাস্থ্যকর নয়। তবে একটু তেল গড়ানো মাংসের ঝোল মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতেই পারে। সেটা কী করে বানাতেন বলায় উচ্ছ্বসিত হয়ে ললিতা বললেন, ১ কেজি খাসির মাংসে মোটে তিনটে মাঝারি সাইজের পিঁয়াজ কুচো, এক চামচ রসুন বাটা, একচামচ আদাবাটা আর একটু বেশি সরষের তেল লাগবে। এই হল কেমিষ্ট্রি। প্রেসার কুকারে তেল দিয়ে পিঁয়াজ, তেজপাতার সঙ্গেই দিতে হবে সামান্য পরিমানে অল্প জলে ভিজিয়ে রাখা গোলমরিচ-জিরে-ধনে-বাড়ির তৈরি গরমমশলা গুঁড়ো। বাদামী হয়ে এলে মাংস দিয়ে কষতে হবে আরো কিছুক্ষণ। তারপরেই এবার দু চামচ ফেটানো টক দৈ, আদা-রসুনবাটা দিয়ে কষে জল দিতে হবে সামান্য। ঠিক যতটুকুনি জল প্রয়োজন তার বেশি নয় কিন্তু। ব্যাস্! সেদ্ধ হলেই নামিয়ে রেডি টু সার্ভ।

জানালেন আরেকটি হালিমের সমতুল্য পদের কথা। যেটি হত তাঁদের বাড়িতে। মুসুর ডাল, মাংস, আদা, পিঁয়াজ, রসুন দিয়ে প্রেসারে সেদ্ধ করে গলিয়ে নিতে হবে। তারপর ঘিয়ের মধ্যে শুকনো লঙ্কা আর গরমমশলার ছঁক দিয়ে পরিবেশিত হবে।


বাবা আমার হাতে মাটন কাবাব খুব পছন্দ করতেন। জানালেন ললিতা। রেসিপি জানতে চাইলেই বললেন,

ধর ২৫০ গ্রাম মাংসের কিমা। তার সঙ্গে একমুঠো ছোলার ডাল, পিঁয়াজ কুচি, রসুন, গোটা গোলমরিচ, দারচিনি আর কয়েকটা শুকনোলঙ্কা সামান্য জল দিয়ে সবশুদ্ধ প্রেসারে সেদ্ধ করবে।তারপর পুরো মিশ্রণটি মিক্সিতে কিম্বা শিলে বেটে নিয়ে বীজমুক্ত কাঁচালঙ্কা কুচি, সামান্য আদা কুচি, নুন, সাজিরে গুঁড়ো আর গরমমশলা দিয়ে মেখে নেবে শক্ত করে। তারপর টিকিয়ার মত করে মাটন কাবাব গড়ে ভেতরে একটি করে লঙ্কা কুচি পুরে দিয়ে তাওয়ায় ঘি মাখিয়ে সেঁকতে হবে। রুটির সঙ্গে স্যালাড সহযোগে জমে যায় এই কাবাব।

এবার বললাম শ্যামলবাবুর খাওয়া নিয়ে কোনো মজার ঘটনা?

ললিতা বললেন,

মারা যাবার আগে বাবা দক্ষিণ কলকাতার মুদিয়ালির কাছে একটি স্কুলের সেক্রেটারি হন। আমি হঠাত একদিন স্কুলে গেছি । গিয়ে দেখি একটি ছেলে স্কুলে নতুন চাকরী পাওয়ার খুশিতে এসেছে বাবার সঙ্গে দেখা করতে।

বললাম, তা সঙ্গে ওটা কি? সে জানাল, স্যার কে বললাম, স্যার, আপনাকে চাকরী পাবার খুশিতে কি দেব ভেবে পাচ্ছি না।

স্যার বললেন, বাড়িতে যা রান্না হবে তাই এনো একদিন। তাই আজ ওনার প্রিয় বিউলির ডাল আর পোস্তর বড়া এনেছি ওনাকে খাওয়াব বলে।

কোন মন্তব্য নেই: