"হলুদ জব্দ শিলে, বউ জব্দ কিলে, পাড়াপড়শী জব্দ হয় চোখে আঙুল দিলে"
এই প্রবাদ নারীর অগ্রগতির যুগে অচল। সেকালে মেয়েদের অল্প বয়সে কিছু বোঝার আগেই বিয়ে দিয়ে দেওয়া হত। আর শ্বশুরবাড়ি অবলা বধূটিকে চাপে রাখবে। তার ওপর সর্বপ্রকার শুল্ক আরোপ করবে। তা সে মাথার ঘোমটা থেকে ছাদে গিয়ে চুল শুকোনো কিম্বা উঁচু করে কাপড় পরা যাতে না পায়ের গোছ দেখা যায় থেকে মৃদুস্বরে কথা বলা এমন কি তর্কে লিপ্ত হওয়া কিম্বা পরপুরুষের সামনে বের হওয়া... সবেতেই যেন সেই নিরীহ বধূটির ওপর ফতোয়া জারি থাকত। সে এগোলেও মুশকিল আবার পিছোলেও দোষ। কথা না শুনলে কিল, ঘুষি, চড় চাপড় এমন কী আরো নানাবিধ শারীরিক অত্যাচারেও পিছপা হতনা তার পরম আকাঙ্ক্ষিত শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রতিদিন রান্নাঘরের শিলে হলুদ বাটার মতোই বেচারী বউয়ের অবস্থা। এখন সে দিন বদলে এসেছে মেয়েদের সুদিন। বানভাসি স্বাধীনতায় বাঁচে তারা।
এবার প্রবাদের পরের ভাগটি অর্থাৎ পাড়াপড়শীর কথা কিন্তু এখনকার যুগেও বেশ প্রাসঙ্গিক। এই ধরুন কেউ প্রতিদিন ওপরের বারান্দা থেকে রাস্তায় টুক করে জঞ্জাল ফেলেন। কেউ আবার বারান্দা ঝেটিয়ে জল আপনার গায়ে ফেলেন, কেউ আবার ভেজা শাড়ি লম্বা করে বারান্দা থেকে ঝুলিয়ে মেলেন আবার কেউ কুকুরকে আদর করে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে আপনার সদরের সামনেই মলত্যাগ করান নির্বিবাদে। তাই বলে আপনার তো আর মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকলে চলবে না। তাই ধৈর্যের বাঁধ যখন ভেঙে যায় তখন এসে উপস্থিত হয় সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। নিরূপায় আপনি তখন ওনার সদরে গিয়ে কলিংবেল বাজিয়েই ফেলেন বিস্তারিত জানিয়ে। আপনার অবস্থা তখন "আপনি বাঁচলে বাপের নাম" । এসব মুখ বুজে সহ্য করাও উচিত নয়। বরং চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেই বাঁচে প্রতিবেশী আর আপনি। সুস্থতায় বাঁচে পরিবেশ । পড়শী বুদ্ধিমান হলে আপনার বন্ধু না হলেও মনে মনে কিন্তু অনুতপ্ত হয়ে শুধরে যান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন