২৯ জানু, ২০১২

শীতলষষ্ঠী


সরস্বতীপুজোর পরদিন গোটাষষ্ঠী বা শীতল ষষ্ঠী। পশ্চিমবঙ্গের রীতি । অনেক পূর্ববঙ্গের মানুষও শখে করেন । আমাদের অরন্ধন আজ । শ্রীপঞ্চমী তিথি থাকতে থাকেতেই গোটা রেঁধে রাখতে হয় । গোটা মুগডাল (সবুজ মুগকলাই ), গোটা শিম, গোটা মটরশুঁটি, গোটা রাঙা আলু, গোটা আলু, গোটা বেগুণ জোড়া সংখ্যায় দিয়ে  (কমপক্ষে ৬টি করে ) গোটা সেদ্ধ হয় নুন দিয়ে । সাথে গোটা শুকনো লঙ্কা আর নুন ।  গোটা মুগ ডালকে শুকনো খোলায় একটু নেড়ে নিতে হবে যতক্ষণ না হালকা গন্ধ বেরোয় । কিন্তু প্রেসারে রাঁধা চলবে না । আর কিছু পরে ঢাকা খুলে দেখতে হবে কিন্তু ডাল বা সবজীকে হাতা দিয়ে ফাটানো চলবেনা ।   সেদ্ধ হয়ে গেলে কাঁচা সরষের তেল দিয়ে নামিয়ে রাখা হয় ।    সাথে পান্তাভাত আর সজনেফুল ছড়ানো কুলের অম্বল ও টক দৈ । সরস্বতীপুজোর পরদিন আমাদের দুপুরের আহারে আর কিছু খাওয়া চলবেনা ।  সবকিছু বাসি রান্না আজ খাওয়ার রীতি । এ হ'ল আমার শ্বশুরবাড়ির রীতি ।
আমার বাবার বাড়িতে খন্ড গোটা । গোটা বিউলির ডাল পালংশাকের গোড়া, মূলো কেটে কেটে আর সাথে আর সব গোটা আনাজ ( শিম, মটরশুঁটি, আলু) দিয়ে   রাঁধা হয় । আমাদের বাড়িতে হয় টাটকা গোটা ।  গোটাসেদ্ধ নামানোর পর কাঁচা সরষের তেল ও আদামৌরী বাটা দেওয়া হয় । কারোর রীতি পঞ্চশস্যের গোটা বানানো ।
 আমাদের আজ শিলনোড়া হলুদ ছোপানো কাপড় পরিয়ে ঠান্ডা হলুদ জলে রাখা থাকে । শিলের কোলে থাকে তার নোড়াটি আর মাথায় জোড়া শিম ও জোড়া কড়াইশুঁটি ।   আজ বহুবছর ধরে বাংলার এই রীতি মেনে আসছেন মায়েরা তাদের সন্তানের মঙ্গলার্থে ।  

কোন মন্তব্য নেই: