৯ জানু, ২০১২

মধ্যপ্রদেশ (১)

 
সেদিন ছিল শীতের মধ্যরাত্রি । ১৯শে ডিসেম্বর রাত তিনটেয় কোলকাতা থেকে হাওড়া স্টেশনে গিয়ে ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে ভোর সাড়ে চারটেয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে চেপে বসলাম আমরা ছ'জনে । ট্রেন ছাড়ার কথা আগের দিন রাতে ।  কিন্তু সরকারী নিদেশে রাতে কোনো ট্রেন যেতে পারবেনা ঝাড়খন্ডের মধ্য দিয়ে । তাই আমাদের এই হয়রানি ।
ঐ দিন আবার আমার জন্মদিন ছিল । বেশ অন্যরকম জন্মদিন হল এবার । আমি নিজেই কেক বানিয়েছিলাম একটা । আমার শাশুড়িমা কুচো নিমকি আর আমার মা কড়াইশুটির কচুরী বানিয়ে নিয়ে ছিলেন সাথে । আমি একদম শুকনো করে ঝাল ঝাল আলুর দম রান্না করে নিয়েছিলাম । সাথে ছিল নলেনগুড়ের সন্দেশ । ভোর হতেই সকলে হ্যাপি বার্থডের রেকফাস্ট নিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়ল । গরম চা কেনা হল আর সাথে সব খাবার দাবার দিয়ে জম্পেশ প্রাতরাশ হল সেই সকালে । খেয়ে দেয়ে আবার চলা কু ঝিক ঝিক করে । সাথে কয়েকটা ম্যাগাজিন । সকলে মিলে হৈ হৈ করে যাবার মজাটাই আলাদা । অবশেষে বার ঘন্টা পর অর্থাত বিকেল সাড়ে চারটের সময় আমরা পৌঁছলাম বিলাসপুর । গাড়ি করে এবার অমরকন্টক যাবার পালা ।    বিন্ধ্য ও সাতপুরা যেখানে মিলিত হয়েছে মৈকাল পর্বতের সাথে সেই স্থানে অমরকন্টক ।  
খুব গভীর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গাড়ি চলতে লাগল । প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘন্টা চলার পর ক্লান্ত হয়ে সেই রাতে আমরা অমরকন্টকে এসে পৌঁছলাম । মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজমের হলিডে হোমে বিলাসবহুল তাঁবুতে রাত্রিবাস । ৬জনের জন্য ৩টি তাঁবু । ঘরে রুম হিটার ছিল তাই রক্ষে । পরদিন ভোরে খবরের কাগজে দেখি সেরাতের তাপমাত্রা ছিল ১ডিগ্রি সেল্সিয়াস । রাতের খাওয়া হলিডেহোমের রেস্টোরেন্টেই সারা হল ।  ভেজ স্যুপ্, স্যালাড, গরম গরম রুটি, ডাল আর পনীর সহযোগে ।  পরদিন ভোরে উঠে জায়গাটির আশপাশ দেখে, চারিদিকে ফুলের সমারোহ আর ঝকঝকে তকতকে একটা নান্দনিক শোভায় মুগ্ধ হয়ে গেলাম । স্নান, প্রাতরাশ সেরে এবার আমাদের যাত্রা অমরকন্টকের পুরোণো এবং নতুন মন্দিরের উদ্দেশ্যে। সাথে অবশ্যই নর্মদা এবং শোন নদীর উত্স সন্ধান ।   
 MPTDCর হলিডে হোমের তাঁবু     
 কলচুরি মহারাজ কর্ণ তৈরী করেছিলেন এই সব প্রাচীন মন্দির .....

 অমরকন্টকের প্রাচীন মন্দির
 নর্মদা-উদ্‌গম-এই কুন্ডের ১২ফুট নীচে নর্মদেশ্বর শিবলিঙ্গের পাশ দিয়ে নর্মদা উত্পন্ন হয়েছে অমরকন্টক পর্বত থেকে । 
 অমরকন্টকের নতুন মন্দির
 সূর্যকুন্ডকে বেষ্টন করে একরাশ মন্দির তৈরী করেছিলেন সম্ভবত অহল্যাবাঈ ....

মাই কি বাগিয়া -যেখানে কুমারী নর্মদার সখ্যতা হয়েছিল গুল-ই-বকোয়ালি নামে সুন্দরী ক্যাকটাস ফুলের সাথে । খেলে বেড়াতেন তার সাথে । এ ও এক লীলা ! এই ফুল নাকি দুর্দান্ত ভেষজ ।  খুব যাগ্-যজ্ঞ করে মানুষ এখানে । নর্মদা এখানে খুব জাগ্রত 
 শোনমুডা ( শোন নদীর উত্সস্থল )
 শ্রীযন্ত্র মন্দির
 কপিলধারা-যেখানে কপিলমুনি তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন 
নর্মদাকে ছুঁয়ে দেখা 

কোন মন্তব্য নেই: