১৮ অক্টো, ২০০৯

আমার দীপাণ্বিতা


আকাশ-প্রদীপ জ্বলছিল কার্ত্তিকের কলকাতার কালো আকাশে। ভূত-চতুর্দশির রাতে চোদ্দ-প্রদীপ জ্বালিনি সেবার।
বিয়ের আগে আমার দীপাবলী ছিল এক রকমের ।
দীপাণ্বিতার পূজো, অলক্ষী বিদায় করে ধনতেরসের লক্ষীবরণ, কত জাঁকজমক করে মায়ের ভোগরান্না, কলাপাতার থালায় প্রসাদ বিতরণ, মজা করে ভাই বোনেদের সাথে ঘিয়ের সাদা সাদা লুচি, নতুনশীতের ফুলকপির ডালনা খাওয়া। তারপরে অন্ধকার ছাদে উঠে বাজি পোড়ানো, আর ছাদের প্যারাপেটে সার সার মোমবাতি দেওয়া। আমার দীপাবলী আমার ঘরের দীপাণ্বিতার আলোয় আলোকিত হয় প্রতিবারে।
বিয়ের পরে আমার দীপাবলী এক এক বার এক এক রকমের হয়েছে। কোনো বার কেটেছে শুধু বারান্দায় বসে আলো দেখে, বাজির মালা দেখে, বাজির আওয়াজ শুনে। কোনোও বারে শুধু ঘুরে বড় বড় প্যান্ডেলে কালীঠাকুর দর্শন করে খেয়ে দেয়ে হুল্লোড় করে।
এবছর মরুপ্রদেশের সীমান্ত ঘেঁষে আরাবল্লী ঘেরা ময়ূরের দেশে দেখে এলেম তারে, রেখে এলেম তারে। অনেক দূরে, মরুশহরের পাশে, ছোট্ট গাঁয়ের দেশে, যেথায় ক্লান্ত মরুজাহাজ চলেছে বালির পথের ধূলো উড়িয়ে, গজগামিনী ময়ূর চলে দুলে দুলে মরুসাহারার বাগান দিয়ে, পেখম ঝুলিয়ে, পুচ্ছ দুলিয়ে..
ঝিঁঝিঁর ডাকে, রাতের আকাশে দেওয়ালির আলোয় এ গ্রামের মানুষ আমাকে অনেক কিছু দেখিয়েছে এবার। আতসবাজির কলরব, আকাশের বুকে আলোর রোশনাই, কত রকমের, কত রঙয়ের বাজি! বড় কষ্ট হল হস্টেলের ছেলেদের জন্যে, যারা এবারে দেওয়ালীতে বাড়ি যেতে পারলোনা, যাদের মায়েরা কত রকম খাবার বানিয়ে, থালা সাজিয়ে বসেছিল ..

২টি মন্তব্য:

Roshmi Sinha বলেছেন...

Wish you a very happy, safe and prosperous Deepavali/Kali Puja... !!! May the festival of lights bring lots of happiness and colour into your life and a New Year blessed with prosperity!

সুশান্ত কর বলেছেন...

যারা বাড়ি যেতে পারল না তাদের মধ্যে আমিও একজন। কতদিন দেশের বাড়িতে দীপাবলীতে যাচ্ছি না! নিজের বাড়িতে এর মজাই আলাদা! তবে কিনা আমাদের ওখানে খাবার দাবাররের বালাই নেই। ওটাতো আমরা জানতাম মাড়োয়ারিরা করে। আমরা ছেলে বেলা কালিপুজোর পর ভোরে বেরিয়ে যেতাম প্যাণ্ডেলে প্যাণ্ডেলে পুজো দেখব আর সম্ভব হলে খিচুড়ি খাবো বলে। সে রকম শেষ করেছি আমার বিয়ের বছরে। স্ত্রী বাড়িতে ছিল। আমি বন্ধে বাড়ি গেছি। ছোটো বোন, বোনের বর আরো ক'জন খুড়তূতো ভাইবোন ছিল। সেবারে শেষ দীপাবলী হয়েছিল। সেই যে স্ত্রী এলো আমার সঙ্গে বিদেশ বিভুইয়ে আরতো তেমন হলো না! এখন আমার ছোট্ট মেয়ে বাজি পোড়ায় আমরা ওকে পাহারা দিই। আর রাত গড়ালে ঘণ্টাখানিক বেড়িয়ে আসি। তাও পরের দিন। আপনার মরু যাত্রা নিয়ে আরো পড়তে পাবো নিশ্চয় ?