৩০ জুন, ২০১৬

বিয়ের পদ্য

    এই হল শ্রীমান অনিন্দ্য(বাপ্টু)  এবং তার নবপরিণীতা বধূ ঐশিকা । তাদের মধ্যিখানে উঁকি দিচ্ছে বাপ্টুর ভাই বান্টি (অরিজিত) । তারা ক্লাবের সূত্রে এবং তারাটিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান "আজ সকালের আমন্ত্রণে" মাধ্যমেই আমাদের আলাপ অনিন্দ্য, অরিজিতের মা ছন্দা নন্দীর সাথে।  সেই ২০০৮ থেকে আমরা একসূত্রে জড়িয়ে আছি। আর এই যোগসূত্রের মধ্যমণিরা হলেন সঞ্চালিকাত্রয় মৈত্রেয়ী, মল্লিকা এবং রিণি। সেই সাথে আরো কিছু বন্ধুও রয়েছে এই ঘটনাবহুল কর্মকান্ডে। সে এক সময় ছিল যখন নিজের কবিতা অন দ্যা স্পট লিখে ফেলে টিভির এই লাইভ কল শোতে শোনাতাম। সে ছিল এক নেশা। তারপরেই বন্ধুদের এসেমেস বৃষ্টি হত ফোনে। সেইদিন আজ গিয়ে পৌঁছল এক ঘটনায়। আমি ছন্দার ছেলের বিয়েতে তাদের নিয়ে লিখলাম এক বিয়ের পদ্য। ছন্দা সেই শিল্পসৃষ্টিকে সম্মান করে ছাপিয়ে তা প্রতিটি নিমন্ত্রিতদের হাতে দিল। এ আমার পরম সৌভাগ্য।
 পাত্রপাত্রী উভয়েই প্রেসিডেন্সীতে একসাথে জিওলজির স্টুডেন্ট ছিল।এখন ঐশী একটি ব্যাঙ্কে চাকরী করে আর অনিন্দ্য কর্পোরেট হাউসে। তাই সেইকথা মাথায় রেখে ওদের নিয়ে এই মজা করা। ছন্দা নন্দীর আদি শ্বশুরবাড়ি হল বড়বাজারে শিবঠাকুর লেনে। প্রতিবছর যে বাড়িতে মহা সমারোহে অন্নপূর্ণা পুজো হয়। তাই অন্নপূর্ণা-মহাদেবের আশীর্বাদ নিয়ে এই লেখার শুরু।  



।। শ্রী শ্রী অন্নপূর্ণা মাতা সহায়, ভাল হউক,শুভ হউক অনিন্দ্য-ঐশিকার জয়।।

*********************

।। গহনকুসুম কুঞ্জ মাঝে অনুপমাতে বাদ্যি বাজে। কিসের বাজনা, কিসের বোল? ভিআইপি রোডে বাজল ঢোল
আও আও সজনীবৃন্দা, ছেলের বিবাহে নন্দী ছন্দা । এহেন বিয়ের জিওলজি নিয়ে বন্ধু ইন্দিরা বন্দিছে ।।

**************

    একদিন বাপ্টু আসিয়া মা'র কানে কহিল, কে যেন আমার বুকে ছুরিটি গুঁজিল...

একদিন রাতে আমি স্বপন দেখিনু, দেবী অন্নপূর্ণা এসে আমারে কহিনু
চেয়ে দেখি ঠোকাঠুকি টেকটনিক প্লেটে, এক কন্যা আসিয়াছে অনুপমার গেটে

    কে তুমি? কে তুমি মম অঙ্গনে? দাঁড়ালে একাকী! নহ মাতা, নহ বিবাহিতা, পরিষ্কার দৃষ্টি আমার, সবে ছানি কাটিয়াছি।

কেউ ন‌য়, সাধারণী শুধু সহপাঠিনী
দেবী প্রেরিত, উপযুক্ত, আধুনিকা নন্দিনী।
মা! ভূতত্ত্ব পড়তে গিয়ে একেই খুঁজে এনেছি....
মাটীর নীচে কোথায় আকর, কোথায় খনি, কোথায় পাথর?
সেই খুঁজতে গিয়ে আমি তাকেই খুঁজে পেয়েছি।
শোনো শোনো,
মাটী খুঁড়েই কষ্ট করে (তার) ঘাড় ধরে টেনে এনেছি।

পাত্র অনিন্দ্য বাপ্টু নন্দীবংশ খ্যাত, অন্নপূর্ণার আশীর্বাদে সুচাকুরীই ব্রত।
পাত্রী ঐশিকা হল দাস বংশ জাত, প্রেসিডেন্সীর সহপাঠী ব্যাঙ্কে কর্মরত ।।
পড়তে পড়তে ভূতত্ত্বে কত যে গোলমাল, টেকটনিক প্লেট ওঠাপড়ায় সব‌ই বেসামাল।
দুজনেরি প্রথম প্রেম ভূতত্ত্ব বলে কথা, দ্বিতীয়তঃ ওলটপালট বিগড়ে গেল মাথা।
ঘন ঘন ফিল্ড ট্রিপ, গাঢ় প্রেমরস, ভূকম্পনে উথালপাথাল, বেজায় নামযশ।।

    বলতে পারো পাত্রপাত্রী কখন নামল ধ্বস? কখনি বা বন্যা এসে ভাসিয়ে দিল ঘর?
।। পাত্র গেল মুম্বাইতে, ধানবাদে পাত্রী, রইল রিমোটকন্ট্রোলে অন্নপূর্ণা সহযাত্রী
ঝালিয়ে নেওয়া চ্যাটবাক্স, বদলে ছিল ঘাঁটি। তবুও এ প্রেম অনিন্দ্যসুন্দর এক্কেবারে খাঁটি
ভাগ্যি ছিল হোয়াটস্যাপ আর হৃদয়পুরের গল্প! তাইতো সে প্রেম পূর্ণতায় দুষ্টুমিষ্টি অল্প।।

    শিবঠাকুর লেনের আপনদেশে, ছাঁদনাতলায় অবশেষে 

    *****************
    শুনল শুনল বালিকা, ঐ যে আসিল ঐশিকা...

।। একজন সেই খুঁজতে গেল অয়েল-ন্যাচারাল গ্যাস, অন্যে সামলায় তখন রাশিরাশি ক্যাশ
অন্নপূর্ণার মন্ত্রবলে কাছাকাছি তারা, ছন্দার ঘর আলো করে বাঁধছে জুটি কারা?
ভজ নিতাই গৌর রাধেশ্যাম ! তেলখনি আর ব্যাঙ্ক ভুলে হানিমুনই ধরাধাম।।

    ।। ওলো তোরা দেখে যা গো, বিরহের একি জ্বালা দেখে যা গো!
নিতাই নন্দী ওকালতি ছেড়ে প্লেনের টিকিট কাটিতেছেন
ছেলেবউ মধুচন্দ্রিমায়, তাই তেনারাও প্ল্যান ফাঁদিতেছেন।।


ঐশী শোনো, লাইফ জমাও ! পরে কোনো সময় মাসীদের রেঁধে খাওয়াও!
ঘরে তোমার লক্ষণ দেবর বান্টি অরিজিত । কিছুদিনেই বাবলি আসিবে, জানিও নিশ্চিত!
সজনি সজনি ঐশি আইল, বাপ্টুর চোখে চোখটি রাখিল
মধুর মিলনে সাক্ষী থাকিল মায়ের সজনী মাসীরা।
আজি এ আষাঢ়ে সমবেত স্বরে, মৌসুমী, বর্ণালী, ইন্দিরা।।

************************

।। আমাদের প্রিয় ছন্দাদি, শ্বশ্রূমাতা হৈলেন।
অনিন্দ্য-ঐশিকার হাতে সংসার সঁপিলেন।
এক্ষণে ফোনে ফোনে সাড়া পাইব নিশ্চিত
ফ্রিকোয়েন্টলি ফোনের ধারে পাইব কিঞ্চিত!
অনুষ্ঠানে ফোনাফুনি শিখিয়া ল‌ইও ঐশী
এও জানিবে একটি শিল্প, কিছু কমবেশী
মোরা খলবলে রোজ ঝলমলে ভোরে কলকল করে হাসি
মোরা ঝলমলে শাড়ি পরিপাটি তাজা নীলপর্দায় আসি ।
মোরা কেশ এলাইয়া, গান শুনাইয়া তোমাদের কথা শুনি
মোরা ঘুম ভাঙানিয়া, সুখ জাগানিয়া ধূমায়িত চায়ে ভাসি !
মল্লিকা-মৈত্রেয়ী-রিণি সঞ্চালিকা ত্রয়ী
শুভেচ্ছায় রৈলাম জেনো পাত্রপাত্রী উভয়েই ।।

**** মৈত্রেয়ী, মল্লিকা, রিণি, বর্ণালী, শিল্পা, শর্মিলা, মৌসুমী ও ইন্দিরা ****

কোন মন্তব্য নেই: