সন্টু,মন্টু,পিন্টু.....যে যেখানে আছিস শুনে যা বাছা, দেখে যা ,শিখে নে তোরা | গুপী আর গান শোনাবে না, বাঘা আর বাজাবে না। সবুজদ্বীপে রাজা নেইরে, হীরকরাজার দেশে আমরা যাবনা কক্ষোনো। ঠাকুমার ঝুলি পড়ে কি লাভ? কঠিন জ্যামিতি,পরিমিতি করেই বা কি হবে? ভূত-পেত্নী-দত্যি-দানব সত্যি সত্যি নেই রে ,রাম-রাবণের যুদ্ধ মিথ্যে। পক্ষীরাজ ঘোড়া কোনোদিনও ছিল না । আমরা সকলে তোদের এতদিন শৈশবকে আমাদের কাজে লাগিয়েছি।তোদের ঘুম পাড়াবার জন্য গল্প বলেছি। সব মিথ্যে...সব ঝুট হ্যায়.....
আমরা,হ্যাঁ আমরাই শিশুদের শৈশবের শ্রাদ্ধ করে, কিশোরের কৈশোরকে কেড়ে নিয়ে তাদের একটু আগে আগেই যৌবনের দায়ভার নিতে বাধ্য করলাম। শিশুরা আর ছোটো নয় এখন। সভ্যতার তরল-গরল গলায় ঢেলে তারা ছুটে চলেছে । তাদের পড়াশুনোর কি প্রয়োজন? তাদের বাঁয়ে কেব্ ল্ মামা তো ডাইনে এফ্-এম্- দাদা । মাথার ওপরে মোবাইল ম্যাজিক তো নীচে পর্ণোগ্রাফি। তারা শুনছে যেমন গান ,দেখছে তেমন নাচ । গানের যেমন ভাষা তেমন সুর | তারা "হাসছি মোরা হাসছি দেখ, হাসছি যেন আহ্লাদে" ভুলে(জরা) স্কোয়ার (টাচমি)কিউব অথবা ঝলক দিখলা যা ... খুল কে বাতা'র বাতাবরনে বড় হচ্ছে বাবা! টিভিতে রিয়েলিটি শো তে কোনোটিতে হয় শিশুদের নাচ,কোনোটিতে কিশোরীদের গান |যেমন তাদের অঙ্গ-সুষমা ,তেমন তাদের লাবণ্য-লালিমা । কখনো কিশোরীটি লাস্যময়ী যুবতী কখনো অপাঙ্গে দৃষ্টিহানা হাস্যময়ী সুন্দরী । প্রতিনিয়ত প্রচার মাধ্যমে শিশুর শৈশবের ও কৈশোরের এহেন অপহরণ আর সহ্য করতে পারছিনা। মনে হচ্ছে, এ কোন যুগে পদর্পণ করলাম? যেখানে কিছু অর্থলোলুপ,স্বার্থান্বেষী নরপিশাচ শিশু-কিশোরকে যৌবনের খুঁটি-নাটি টিপ্-স্- সহ আকর্ষনীয় শরীরি-বিভঙ্গ ,রগরগে পোশাক এর সোনালী মোড়কে আবৃত করে রূপোলী পর্দায় পেশ করছেন। শিশুটি একটি অকালপক্ক্ব যুবাকীটে রূপান্তরিত হচ্ছে। যেটি পিউপা থেকে লার্ভা না হয়ে ডাবল্ প্রোমোশান পাওয়া একটি প্রজাপতি। এই সব শিশুর কি ভবিষ্যত? এদের দেখে আর কি কখনো মনে হবে"ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে" ? কিই বা এদের জীবনাদর্শ?এরা হয়তো বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত অর্থ উপার্জন করবে কিন্তু এদের রুচিবোধ,শালীনতা নীতিবোধ কি কিছু অবশিষ্ট থাকবে? অথবা কৈশোরে এত অর্থের স্বাদ পেয়ে গেলে যৌবনে ধরা কে সরা জ্ঞান করবে। এত প্রাচুর্য্যের কি প্রয়োজন আছে?
"বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে" - এই উক্তির অবতারণা করে বলি,দোহাই,বিজ্ঞাপনদাতা! দয়া করে শিশুর যৌনতায় সুড়সুড়ি দিয়ে ,তাদের পণ্যরূপে বাজারে প্রোমোট করবেন না, তাতে আপনাদের বাসনা সিদ্ধি না হোক ,দর্শকের কামনা চরিতার্থ না হোক । একান্ত প্রয়োজন থাকলে অন্য উপায় খুঁজুন , মেনে নিলাম যে, ব্যাপক বিশ্বায়নের ঢেউতে সাঁতার কেটে আমাদের শিশুরা ইঁদুর-দৌড়ের সামিল আজ। কিন্তু সাঁতারের পূর্বে কিরূপে, কখন ডুব দিতে হয় , বা নিঃশ্বাস নিতে হয়, এই শিক্ষা না নিয়ে বিশ্বায়নের ঢেউয়ের সম্মুখীন হ'লে বিপদ বাড়বে বই কমবে না।
২টি মন্তব্য:
good one. baba and ma also read it.
শুধু লেখা এর প্রশংসা করার জন্য নয়, এই বিশ্বায়নের বাঁদর গুলো কে যদি ধরে ধরে "হীরক রাজা এর দেশ" এর মগজধলাই যন্ত্রে ঢূকিয়ে এই লেখা টা "মন্ত্র" এর মত এদের মগজ এ পুরে দিতে পারতাম তাহলে আনেক খুশি হতাম।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন