বাংলা ব্লগ


সোনারতরী আমার স্বপ্নের নৌকাখানি । সেই ২০০৮ এর ফাল্গুনে প্রেমে পড়েছিলাম সোনারতরীর। তারপর থেকে  কখনো সে বুঝে নিয়েছে আমার মুড সুইং, মেপেছে আমার মনের হাংরি টাইড; হ্যালুসিনেটেড হাইওয়ের ধারে দাঁড়িয়ে সঁপে দিয়েছি নিজেকে তার কাছে । সেই থেকে তার হাতদুটো ধরে এগিয়ে চলেছি ছেঁড়া ছেঁড়া কবিতায়, অলস ভাবনার গদ্যে ।
বৈষ্ণবদের ললাটে আঁকা রসকলি দেখে গোপাল ভাঁড় রঙ্গ করে বলেছিল, ফোঁটা কাটুচি। তা বাপু আমি কোনো ফোঁটা  কাটি নি। সরস লেখার মাধ্যমে একটু হাস্যরস উজাড় করার চেষ্টা করেছি এই রসকলিতে। রসায়নের রসনায় ছিলাম বিভোর। এবার রসের বাটি উপছে পড়ল । হাতে পায়ে মুখে সেই রস খানিকটা মেখে নিয়ে, খানিকটা চেটে নিয়ে বিলিয়ে দেওয়ার পালা। রসরচনায় পেয়ে বসা আর কি! মানে  যাকে বলো রম্যরচনা।


দেশবিদেশ ভ্রমণের নেশায় মাতোয়ারা হয়ে  প্রায়ই পথে নেমে পড়ি । প্রতিবারই ভাবি এ কিসের টান? এ কিসের মায়া? কেন এই অমোঘ হাতছানি? কিসের ইন্দ্রজালে বশীভূত হই ? জানি সেই পথশ্রম কি ভয়ঙ্কর ! তবু নিশির ডাকের মতো ছুটে চলি সেই সর্বনাশিনী পথমায়ায়। চোখ প্রাণভরে পান করে নতুন নতুন অঞ্চলের অন্তরসুধা।লিখে চলি পথের পাঁচালি।  দেশের কিছু ভ্রমণকথা  নিয়ে ব‌ইমেলা ২০১৪ তে সৃষ্টিসুখ থেকে প্রকাশিত "চরৈবেতি" ব‌ইখানি অনলাইন পাওয়া যাবে এইখানে
পেরিয়ে এলাম তেপান্তর কবিতার খেরোখাতায় হোঁচট খেতে খেতে।  তারপর সবকিছু ওলটপালট ! ছেঁডাছেঁড়া কবিতারা এল আমার  হয়ে। ঘুমঘোরে পদ্যপুর পাড়ি দিলাম । ঋতুচক্রের ঝরাপাতায়,  ফাগুনে সে দিল কিছু ম্যাজিক-মূহুর্ত । বৈশাখী বিকেলে এলোপাথাড়ি শিলাবৃষ্টিতে, বর্ষার মেঘদুপুরে ছন্নছাড়া ইলশেগুঁড়িতে, শরতের শিশিরভেজা শিউলিতলায়, হেমন্তের হিমঝরা সন্ধ্যেবেলায় আর শীতের অমৃতকমলার দুপুরগুলোয়  আমার গদ্যপুর পাড়ি দেবার সাথে সাথে  তার সঙ্গে চলেছিল নীরবে ওঠাবসা। আমি বলি ছিন্নপাতা। তুমি বলবে ছেঁড়াখাতা। কে জানে? কবিতাই বুঝি এর নাম!


ময়ের হাত ধরে চার বছর চলার পর অনেকেই সোনারতরীরতে খুলে দিল তাদের ভাবনার খোলাখাতা ।
সেই বন্ধুদের নিয়ে সোনারতরী ভেসে চলেছে আপনমনে। প্রথমে  হৈ হৈ করে শুধু অর্কুটের স্টেটাস আপডেট দিয়ে একরাশ কবিতা  “অর্কুট-আগমনী-পাঁচালি, তারপর ফেসবুকের বেশকিছু বন্ধুদের বসন্তের কবিতা নিয়ে “দোলছুট” ও পয়লাবৈশাখে “পয়লা সাহিত্য-পার্বণ”। ২০১১ পুজোয় এই ডিজিটাল আন্তর্জালিক পত্রিকার নাম দিলাম “প্যাপিরাস”। বছরে বাঙ্গালীর অন্যতম দুটি উৎসবের কথা মাথায় রেখে ১লা বৈশাখ ও পুজোয় প্রকাশিত হয় প্যাপিরাস।