মনোরম উদ্যান, ম্যাডক্স স্কোয়ার, লিচুপার্ক যাই বলো তোমরা ।
প্রতিদিনের মর্নিংওয়াকের আর কেতাদুরস্ত সান্ধ্যভ্রমণের,
কিম্বা নিরিবিলির কিশোরপ্রেমের অথবা একান্ত আপনজনের প্রতীক্ষার বেঞ্চিপাতা;
কিছুটা গোলাপের কেয়ারি করা, কিছুটা রেলিং দিয়ে ঘেরা মরশুমি ফুল।
ঘিরে দিলেই মনে হয় প্রোটেক্টিং ইন্ডিয়া ফ্রম ইন্ডিয়ানস!
দম আটকে আসে, আবার খোলা হাওয়ায় দম নেয় অনেকে।
আমি এক অর্বাচীন! বুড়ো হাবড়াদের দলে,
তোমাদের কলরব মুখরিত এই পার্কের একপাশে, মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ ;
আজ শোকস্তব্ধ আমি !
বুঝি আমি রাত পোহালো, বুঝি যে পূবের আলো,
আমাকে তোমরা দিলে শহরের নরম মাটি, আভিজাত্যের আস্তানা
আমি তোমাদের দিয়েছি সন্ধ্যাফুলের মিষ্টি মধু,
দুপুর পাতার ঠান্ডা ছায়া, আর নিশুতরাতের স্তব্ধ মায়া ;
আমি স্বজাত্যের অহমিকা আঁকড়ে ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পার্কের এককোণে,
যেন দারিদ্রের অহঙ্কারে জর্জরিত ভিখিরী বুড়ির লোটা কম্বল সম্বল করে পড়ে থাকা ।
তবে এক লহমায় দেখে নিলে নজর কাড়ি সকলের ।
কিন্তু কথা ছিল ভেসে যাবো এই বাটে, তোমাদের কলকাকলিতে, হাসিতে,
পাখির গানেতে, পথের ধূলোতে, ধোঁয়াতে ;
আর তোমাদের খালি দিয়ে যাবো একরাশ প্রাণবায়ু,
আর হাত ভর্তি করে একমুঠো সবুজ ।
বিগত কত শতকের দোল-দুর্গোত্সব, কত মেলা, চড়ুইভাতি, সভা, মিটিং,
কত না বলা প্রেম, কত অপেক্ষার সাক্ষী হয়ে রইল আমার মৌনতা !
আমি কাঁদলাম আর হাসলাম ;
জীবনপুরের পথিকের পসরা নিলাম ভাগ করে ।
আজ বৃষ্টি এসে মেশে আমার চোখের জলে, আজ শিশির এসে পড়ে আমার শুকনো ফলে,
একদিন নিষ্ঠুর নিয়তি এসে করাত চালাল আমার শরীরে, নবকিশলয় আজো আমার অঙ্গের ভূষণ ।
আমি পুরোটাই বাঁচতে চেয়েছিলাম তোমাদের মধ্যে,
আজ আমার একহাতে মুষ্ঠিবদ্ধ লোহার রেলিং আর এক হাতে আমার অঙ্গীকার !
ওগো তিলোত্তমা ! তোমার রূপের বড় অহংকার !
চেয়ে দেখ একটিবার !
আষ্টেপিষ্টে বেঁধেছি নিজেকে,
জড়িয়েছি ম্যাডক্সের মায়ায়, স্কোয়ারের কোণায়,
শুধু একটু বাঁচতে দাও আমায় !

ভালো লিখেছেন! এই গাছটাকি এমনি আছে অনেকদিন ধরে , না নতুন কাটা?
উত্তরমুছুনtulshir malar moton shobdobondho shajano....
উত্তরমুছুনshohoj r shundor.....